ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান

ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকেরই ঘন ঘন ঘটে। পেশিতে টান ধরার অন্যতম কারণ শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়া, যার ফলে পেশির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়। এই ধরনের সমস্যা সাধারণত রাতে পাশ ফিরে শোয়ার সময় বা হাঁটাহাঁটি করার সময়, অথবা বসে বা শুয়ে থেকে ওঠার সময় দেখা দেয়। এছাড়া, পেশিতে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমে যাওয়ার কারণে কিংবা ভিটামিন ও পটাশিয়ামের অভাবেও পেশিতে টান ধরতে পারে। পেশিতে টান ধরলে তা কমানোর জন্য দ্রুত আক্রান্ত জায়গায় বরফ সেঁক দেওয়া উচিত এবং মাসাজ করে পেশিকে শিথিল করা প্রয়োজন। মাসাজ এমনভাবে করা উচিত যাতে সেখানে চাপ পড়ে, তবে ব্যথা অনুভূত না হয়। এছাড়া, গরম জলে ভেজানো তোয়ালে ব্যথার জায়গায় চেপে ধরলে আরাম মিলতে পারে। পেশির টান কমানোর জন্য একটি উপকারি ব্যায়াম হলো, এক পা কোমরের কাছে তুলে দাঁড়িয়ে রাখা, যা রক্ত সঞ্চালন ভাল করতে সাহায্য করে। এছাড়া, পিঠে টান ধরলে ভুজঙ্গাসান একটি কার্যকর ব্যায়াম। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া এবং পেশি সচল রাখতে হাঁটাহাঁটি করা। যদি ঘন ঘন পেশিতে টান ধরতে থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পায়ের রগে ব্যাথার ঔষধ

পায়ের রগে ব্যাথা বা পেশীতে টান ও ব্যথার জন্য সাধারণত বেশ কিছু ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে ডিক্লোমল ট্যাবলেট (Diclomol Tablet) একটি জনপ্রিয় ব্যথানাশক ওষুধ, যা পেশীর প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে, এই ওষুধের বিকল্প হিসেবে আরও কিছু ট্যাবলেট পাওয়া যায়, যেমন:

  1. ফেনাক প্লাস ৫০এমজি/৩২৫এমজি ট্যাবলেট (Fenak Plus 50mg/325mg Tablet): এই ওষুধটিও ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, এবং এটি একইভাবে পেশীর সমস্যা যেমন টান বা অস্বস্তি কমাতে ব্যবহৃত হয়।
  2. ডিক্লোউইন প্লাস ট্যাবলেট (Diclowin Plus Tablet): এটি একটি আরেকটি উপকারী ওষুধ, যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে কার্যকর।
  3. ইন্টাজেসিক ৫০এমজি/৩২৫এমজি ট্যাবলেট (Intagesic 50mg/325mg Tablet): এই ওষুধটি পেশীর ব্যথা এবং টান কমাতে ব্যবহৃত হয় এবং এটি বিশেষভাবে প্রদাহজনিত ব্যথা নিরাময়ে কার্যকর।
  4. ক্যাডিনেক্সট প্লাস ৫০এমজি/৩২৫এমজি ট্যাবলেট (Cadinxt Plus 50mg/325mg Tablet): এটি একটি সংমিশ্রিত ওষুধ যা ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, এবং পেশীর অসুবিধা ও টান থেকে উপশম দেয়।
  5. রুমাকোর্ট ৫০এমজি/৩২৫এমজি ট্যাবলেট (Rhumacort 50mg/325mg Tablet): এই ওষুধটিও প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয় এবং পেশী বা রগের ব্যথা ও অস্বস্তি কমাতে সহায়ক।

এই ওষুধগুলো সাধারণত ব্যথা, টান ও প্রদাহের জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে এগুলো ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চোখ চুলকানোর কারণ কি

পায়ের রগে ব্যাথার হোমিও ঔষধ

গোড়ালি ব্যথার অন্যতম কারণ হল প্লান্টার ফ্যাসাইটিস, যা পায়ের গোড়ালি থেকে বুড়ো আঙুল পর্যন্ত বিস্তৃত প্লান্টার ফ্যাসিয়া টিস্যুর প্রদাহ। এই অবস্থায় পায়ের গোড়ালির আশপাশে ধারালো বা ছুঁড়ি দিয়ে কাটার মতো ব্যথা অনুভূত হয়, এবং হাঁটাচলা, ব্যায়াম বা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা আরও বাড়ে। ৪০ থেকে ৬০ বয়সের মধ্যে, স্থূলত্ব, অতিরিক্ত ব্যায়াম, পায়ের গঠনগত সমস্যা (যেমন ফ্ল্যাট ফুট বা হাই আর্চ), এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা হাঁটাহাঁটি করার কারণে এই সমস্যাটি সাধারণত দেখা যায়।

হোমিওপ্যাথিতে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস বা গোড়ালি ব্যথার বেশ কিছু কার্যকরী চিকিৎসা রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান ওষুধগুলি হল:

  1. রাস টক্স (Rhus Tox): যদি সকালে হাঁটতে গেলে ব্যথা হয় এবং ধীরে ধীরে হাঁটলে ব্যথা কমে, তবে এই ওষুধটি খুব উপকারী।
  2. ব্রায়োনিয়া অ্যালব (Bryonia Alba): বিশ্রামে কোনো ব্যথা না থাকলে, তবে নড়াচড়ার সাথে ব্যথা বাড়ে, সেক্ষেত্রে এই ওষুধটি কার্যকর।
  3. ম্যাগ ফস (Mag Phos): যদি গরম দেওয়া ব্যথায় আরাম দেয়, তবে এই ওষুধটি ব্যবহার করা উচিত।
  4. লিডাম পল (Ledum Pal): যদি বরফ দেওয়া ব্যথায় আরাম দেয়, তাহলে এই ওষুধটি খুব কার্যকরী।

এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধগুলি লক্ষণ অনুযায়ী প্রয়োগ করলে পায়ের গোড়ালির ব্যথা কমানো সম্ভব। তবে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

By SAGDOM

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *