ডিম একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যা আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকারী উপাদান প্রদান করে। এতে ৫ গ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যার মধ্যে ৩.৫ গ্রামই হলো উপকারী এবং ভালো কোলেস্টেরল, যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা লিউটিন ও জিয়াজ্যান্থিন নামক উপাদান দুটি চোখের ছানি পড়া রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এছাড়া, ডিমে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন, ভিটামিন, এবং খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরের পেশী গঠন, শক্তি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন শারীরিক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দিনে একটি ডিম খেতে পারেন, যা তার স্বাস্থ্য উন্নত রাখতে সহায়ক।
খালি পেটে সিদ্ধ ডিম খেলে কি হয়
খালি পেটে সিদ্ধ ডিম খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। ডিমের সাদা অংশে উচ্চ মানের জৈব আমিষ থাকে, যা শরীরের পেশী গঠন এবং মেরামতের জন্য সহায়ক। আর ডিমের কুসুমে থাকা স্নেহ পদার্থ, লৌহ, ভিটামিন এ, ডি এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান শরীরের নানা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখে। বিশেষত, শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় গঠন এবং মেধার বিকাশে ডিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডিমে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এবং চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সহায়ক। খালি পেটে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে শরীরে প্রোটিনের সরবরাহ দ্রুত হয়, যা সারা দিনের জন্য শক্তি প্রদান করতে সাহায্য করে। তবে, অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার পরিণামে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেতে পারে, তাই পরিমাণে খাওয়া উচিত।
রাতে সিদ্ধ ডিম খেলে কি হয়
রাতে সিদ্ধ ডিম খেলে শরীরের জন্য বেশ কিছু উপকারী প্রভাব থাকতে পারে। এটি উচ্চ মানের প্রোটিন সরবরাহ করে, যা পেশীর মেরামত ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। ডিমে থাকা ট্রিপটোফান ও মেলাটোনিন ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে, ফলে গভীর এবং স্বাভাবিক ঘুম পাওয়া যায়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং খাওয়ার পর তৃপ্তি অনুভব হয়, যা গভীর রাতের অতিরিক্ত স্ন্যাকিং কমাতে সাহায্য করতে পারে। এমনকি রাতে খাওয়া হলে পরবর্তী দিনের খাবারের প্রতি আগ্রহ কমতে পারে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ তা হজমের সমস্যাও তৈরি করতে পারে।
ব্রয়লার মুরগির ডিমের উপকারিতা
ব্রয়লার মুরগির ডিম বা ফার্মের ডিমও পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর হতে পারে। ফার্মের মুরগি নিয়ন্ত্রিত খাদ্য ও পরিবেশে পালিত হওয়ায়, ডিমে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও মিনারেল থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক। এই ডিমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাওয়া যায়, যা শরীরের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে স্বাদের দিক থেকে অনেকেই দেশি ডিম পছন্দ করেন, কারণ দেশি ডিমের কুসুম গা dark ় এবং এর স্বাদ তেলতেলে ও সমৃদ্ধ। কিন্তু ফার্মের ডিমেও প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং সহজলভ্য।
দেশি মুরগির ডিমের অপকারিতা
দেশি মুরগির ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে বিশেষজ্ঞরা চল্লিশের পর ডিম খাওয়ার পরিমাণ সীমিত করার পরামর্শ দেন। কারণ নিয়মিত মুরগির ডিম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এটি শুধু দেশি মুরগির ডিমের ক্ষেত্রেই নয়, ফার্মের মুরগির ডিমেও প্রযোজ্য। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণ হতে পারে, তাই সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে ডিম খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। তবে কোয়েলের ডিমে রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি২) রয়েছে, যা শরীরের জন্য উপকারী।