দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি

দুধ খাওয়ার উপকারিতা অনেক। এটি শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। দুধে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি, প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন বি-১২, নিয়াসিন ও রিবোফ্লভিন সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শরীরকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে। প্রথমত, দুধের ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের গঠন মজবুত করে, ফলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া ও হাড়ের সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া, দুধের পুষ্টিগুণ শরীরের বিভিন্ন ধরণের চাহিদা পূরণ করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। দুধ পানে মানসিক চাপ কমে, কারণ এটি ঘুমের উদ্রেক ঘটায় এবং শরীরকে শিথিল করে। এছাড়া, দুধ শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে। পিরিয়ডের সময় ব্যথা ও অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে দুধ উপকারী হতে পারে, কারণ এটি পেট ঠাণ্ডা রাখে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা মাংসপেশির গঠন উন্নত করে এবং শারীরিক শক্তি বাড়ায়। তাছাড়া, দুধ দেহের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে এবং ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখে। এই সকল উপকারিতা ছাড়াও, দুধ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা দেহকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রতিদিন কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত

প্রতিদিন কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত, এটি নির্ভর করে শরীরের প্রয়োজনীয়তা ও পুষ্টির চাহিদার ওপর। বিজ্ঞানী ওয়াল্টার উইলেটের মতে, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষ যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ দুধ খান, তাহলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি থাকবে না এবং অনেক শারীরিক সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে। ভারতের মতো দেশের জন্য, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা দিনে ২-৩ কাপ দুধ খেতে পারেন, তবে তার বেশি খাওয়া উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত দুধ খাওয়া শরীরের জন্য ভালো হতে পারে না। আর এক জন পুরুষের জন্য ৩-৪ কাপ দুধ উপযুক্ত, যা তার শারীরিক প্রয়োজনীয়তার সাথে মানানসই। দুধের পরিমাণ অতিরিক্ত হলে, তা অতিরিক্ত ক্যালোরি ও চর্বি বাড়িয়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। সুতরাং, প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে দুধ খাওয়ার মাধ্যমে আপনি পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারেন এবং সুস্থ থাকতে পারেন।

রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা অনেক। ঘুমানোর আগে এক কাপ ঈষদুষ্ণ দুধ খেলে আপনি পরবর্তী দিনে অনেকটা আরাম অনুভব করতে পারেন। দুধের মধ্যে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড পেশির প্রদাহ নিরাময়ে সাহায্য করে এবং ট্রিপটোফ্যান নামক উপাদান স্নায়ুর উত্তেজনা প্রশমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে শরীর শিথিল হয়ে ভালো ঘুমের উদ্রেক হয়, ফলে মানসিক চাপ কমে এবং রাতে ঘুমও উন্নত হয়। দুধের পেপটাইডগুলো স্নায়ু শান্ত করতে সাহায্য করে, যার ফলে স্নায়ুতন্ত্রে প্রশান্তি বজায় থাকে। তবে, অতিরিক্ত দুধ খেলে কিছু অপকারিতা দেখা দিতে পারে। যেমন, দুধে থাকা ল্যাকটোজ অনেকের জন্য হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যারা ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু তাদের ক্ষেত্রে পেট ফোলাভাব বা অস্বস্তি হতে পারে। এছাড়া, কিছু মানুষের জন্য রাতে দুধ খাওয়া ওজন বৃদ্ধির কারণও হতে পারে। সুতরাং, সীমিত পরিমাণে রাতে দুধ খাওয়া উপকারী হতে পারে, তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

হার্নিয়া রোগের লক্ষণ কি

অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়

অতিরিক্ত দুধ খাওয়া শরীরের জন্য কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যদিও দুধের পুষ্টিগুণ অনেক। দুধ ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ, তবে অতিরিক্ত দুধ খাওয়ার ফলে হজম সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। খুব বেশি দুধ খেলে পেট ফোলাভাব, বমি বমি ভাব এবং অস্বস্তির সৃষ্টি হতে পারে, যা অন্ত্রের সমস্যা বা খাবারের প্রতি অসহিষ্ণুতা নির্দেশ করতে পারে। এছাড়া, অতিরিক্ত দুধ পান করলে ক্লান্তি এবং অলসতার অনুভূতি হতে পারে, কারণ দুধের কিছু উপাদান অন্ত্রের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা শরীরকে দুর্বল করে দেয়। ত্বকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন ব্রণ বা র্যাশ, বিশেষ করে দুধের রাসায়নিক উপাদান প্রদাহ সৃষ্টি করলে। অধিক দুধ খাওয়ার কারণে হাড়ের ঘনত্বও কমে যেতে পারে, যা হাড়ের ভঙ্গুরতা বাড়ায়। এমনকি, অতিরিক্ত দুধ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতায়ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, স্মৃতিভ্রংশ এবং মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই, প্রতিদিন ১-২ গ্লাস দুধ খাওয়ার পরিমাণ যথেষ্ট এবং সঠিক পুষ্টি সরবরাহের জন্য উপযুক্ত।

By SAGDOM

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *